শরীরে লবণ কম থাকলে

শরীরে লবণ কম থাকলে কী কী হতে পারে?

তথ্যপ্রযুক্তি
Spread the love

একজন অজ্ঞান রোগী এসেছেন, যাঁকে দেখে ডাক্তারের কাছে স্ট্রোক মনে হচ্ছে না। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখা গেল, একজন বয়স্ক রোগী, জ্ঞানের মাত্রা অনেক কম। রোগীর মেয়ে জানান, কিছুক্ষণ আগে দুবার অনেক বমি করেছেন। এরপর অসংলগ্ন কথা বলছিলেন, একটু পর অজ্ঞান হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেল, লবণের (সোডিয়াম) পরিমাণ অনেক কমে গেছে। শিরাপথে লবণের ঘাটতি পূরণ করার পর রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাসায় চলে যান। সোডিয়াম বা লবণের ঘাটতির কারণে এমন হতে পারে যে কারও। দেশের একজন বিশেষজ্ঞ ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার এই তথ্য জানান।

ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো সোডিয়ামও আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ। এর মধ্যে সোডিয়াম নার্ভের ওপর প্রভাব ফেলে বলেই এর কমে যাওয়া একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি।

লবণের ঘাটতি কেন হয়

বেশ কিছু কারণে শরীরে লবণের ঘাটতি হতে পারে। এর মধ্যে আছে—

  • ডায়রিয়া
  • বমি
  • আগুনে চামড়া পুড়ে গেলে
  • কিছু ওষুধ সেবনের কারণে। যেমন ডাই-ইউরেটিক–জাতীয় ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ ইত্যাদি
  • এড্রেনাল গ্রন্থি ঠিকমতো কাজ না করলে
  • হাইপোথাইরয়েডিজম
  • কিডনি, লিভার ও হার্টে জটিলতা থাকলে
  • অনেক বেশি পরিমাণ পানি পান করলে
  • শিরাপথে ইলেক্ট্রোলাইট–ফ্রি স্যালাইন অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ করলে।

উপসর্গ কী

উপসর্গ নির্ভর করে সোডিয়াম কত সময়ের মধ্যে কমেছে ও কত বেশি কমেছে, তার ওপর। যদি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমে, আর সেটা ১২৫ মিলিমোলের নিচে নেমে যায় তবে উপসর্গ অনেক বেশি হয়। একে আমরা অ্যাকিউট হাইপোন্যাট্রিমিয়া বলি। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিত্সা দরকার হয়। ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হলে এটা ক্রনিক। এ ক্ষেত্রে উপসর্গ না–ও থাকতে পারে, কারেকশনও ধীরে ধীরে করতে হয়। সোডিয়াম কমে গেলে প্রধান যে লক্ষণ, তা হলো জ্ঞানের মাত্রায় তারতম্য হওয়া। এ ছাড়া রোগীরা যে উপসর্গ নিয়ে আসেন, তা হলো—

বমি ভাব, মাথাব্যথা, ভুলে যাওয়া, নির্জীব হয়ে পড়া, ঘুম ঘুম ভাব, এলোমেলো কথা বলা, খিঁচুনি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, হঠাৎ হার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

চিকিত্সা কেমন

জ্ঞানের মাত্রা কমে গেলে দ্রুত রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে। সোডিয়ামের মাত্রা বেশি কমে গেলে, শিরাপথে স্যালাইন দিয়ে তা পূরণ করতে হবে। রোগীর আগে থেকে কী অসুখ ছিল, কী কী ওষুধ সেবন করছেন।

ডায়রিয়া বা বমি হলে অবশ্যই খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে। বারবার সোডিয়াম কমে গেলে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে এবং কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে।

 

2 thoughts on “শরীরে লবণ কম থাকলে কী কী হতে পারে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *