বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেট কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের কোচ হিসেবে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দ্বিতীয় দফায় তিনি কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন চলতি বছরের ৩১শে জানুয়ারি। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরে এখন পর্যন্ত মোট ৪৫ জন খেলোয়াড় খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি টেস্ট সিরিজের জন্য যে স্কোয়াড নিয়ে গেছেন সেটি তার কাছে একটু অন্যরকম। তার মতে বাংলাদেশের এই দলটাই সবচেয়ে সেরা দল এই সময়ের জন্য।
চেন্নাইয়ে আজ একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিছুদিন আগেই পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জিতে এসেছে বাংলাদেশ। ওই সিরিজটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক বিজয় ছিল। কেননা এর আগে কখনোই বাংলাদেশ পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি। ওই সময় শরিফুল ইসলাম চোটে পড়েন, ফলে দলে জায়গা করে নেন জাকির আলী। আর কোন পরিবর্তন না করেই সেই শক্তিশালী দল নিয়েই ভারতে এসেছেন টেস্ট সিরিজের স্কোয়াড নিয়ে। ভারত টেস্ট সিরিজ খেলতে সেই পাকিস্তানের ধবলধোলাই করা দলটি মূলত ভারতে অবস্থান করছে। আগামী বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট শুরু হবে। এই টেস্ট স্কোয়াড থেকেই ১১ জন খেলোয়াড় ভারতের বিপক্ষে লড়াই করবে। যেহেতু চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন এই সময়ের জন্য এই দলটি হচ্ছে সেরা দল এমন কথায় ভারতের বিপক্ষে আলাদা প্রাণ শক্তি খুঁজে পেতে পারেন বাংলাদেশী ক্রিকেট খেলোয়াড়েরা।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন আমরা একটি শক্তিশালী ভারসম্পন্ন কোন দল নিয়ে এখানে এসেছি। আমাদের বেশ কয়েকজন ভালো পেসার রয়েছে অর্থাৎ ভালো কয়েকজন ফাস্ট বোলার নিয়ে ভারতে এসেছি। আমাদের স্পিন আক্রমণও যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। তার এই দাবির সত্যতা নিরূপণ করা যায় সর্বশেষ পাকিস্তান সফরের স্কোয়াড দেখেই।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের জয়ে ২ ইনিংসেই ভালো পারফরম্যান্স করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। আরো ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে। পাক প্রতিপক্ষকে ১৪৬ রানে অলআউট করার মধ্যে দুই স্পিন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন সাত উইকেট। অন্য তিন উইকেট শিকার করেছিলেন পেস বোলাররা।
বাংলাদেশের বোলারদের দাপট আরো স্পষ্ট হয়ে পড়ে দ্বিতীয় টেস্টে। এবার কিন্তু স্পিন এর পরিবর্তে খেলা দেখান পেস বোলাররা। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ টি উইকেট নেন বাংলাদেশের প্রেস বোলাররা। টেস্টে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি অনন্য নজির। মিরাজ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন। পাকিস্তানের নিজের মাটিতে এভাবে নাস্তানাবুদ করা বোলারদের জন্য এক নজিরবিহীন ঘটনাই বলা যায়। এটি ছিল সত্যিই এক মনমুগ্ধকর দৃশ্য। হয়তো এই কারণেই বাংলাদেশের কোচ হাথুরুসিংহের আত্মবিশ্বাসটা অন্যরকম। এ কারণেই মনে হয় ভারতের মাটিতে বসে হাতুরুসিংহ এরকম সাহস এর সঙ্গে কথা বলছেন।
ব্যাটসম্যানদের প্রাপ্যটাও কম দিলেন না এই কোচ। তিনি বলেন আমাদের ব্যাটিং এর গভীরতা আছে দুটি কারণে। আর তা হলো আমাদের দুজন স্পিন বোলার আসলে নিখাদ ব্যাটসম্যানও, তাদের টেস্টে সেঞ্চুরিও রয়েছে। অন্য কারণটি হল আমাদের দুইজন উইকেট কিপার দলের অন্যতম দুই প্রধান ব্যাটসম্যান। তাই আমি মনে করি আমাদের এই ক্রিকেট দল সত্যিই একটি ভারসাম্যপূর্ণ দল হয়েছে। এটি আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সহায়তা করবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
ভারত সফরে গিয়ে বাংলাদেশ এবার দুটি টেস্ট এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে। প্রথম টেস্ট আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় টেস্ট ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১লা অক্টোবর পর্যন্ত কানপুরে অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে টি-টোয়েন্টি তিনটি ম্যাচের মধ্যে প্রথমটি গোয়ালিয়রে ৭ অক্টোবর, দ্বিতীয়টি দিল্লিতে ১০ অক্টোবর এবং তৃতীয়টি হায়দ্রাবাদে ১৩ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।
আরোও পড়ুন ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয় করলো বাংলাদেশ