গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা এই সংখ্যালঘু নিয়ে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। তবে হামলা যে হয়নি এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। সংখ্যালঘু নিয়ে গোবিন্দচন্দ্র প্রামানিক, যিনি বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব। তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে তার মন্তব্য তুলে ধরেছেন। মূল পরিস্থিতি কেমন তা প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন।
তার দেওয়া বক্তব্যের মূল অংশগুলোই আপনাদের এখানে তুলে ধরছি।
তিনি বলেন গত পাঁচ তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছিল। ঐদিন সন্ধ্যা থেকেই আমরা সারাদেশে হিন্দু বাড়িতে মন্দিরে হামলার খবর শুনতে পাই। তিনি আরো বলেন বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে যে সকল এলাকায় যাতায়াত মানুষের আনাগোনা একটু কম ওইসব এলাকায় এবং যারা আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন ঐ সকল হিন্দু বাড়িঘরে হামলা এবং মন্দিরে আক্রমণ করা হয়েছে । পাশাপাশি তিনি আরো বলেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য জাতীয় পরিষদের সদস্য যারা ছিলেন তাদের বাড়িতেও এরকম হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য জাতীয় পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এজন্যই তাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। কেননা তারা এই বর্তমান যে আন্দোলন হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন এই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছিল এই ছাত্র যারা আন্দোলন করছে এরা নব্য রাজাকার এদেরকে বিচারের আওতায় এনে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে শাস্তি দিতে হবে এবং এরা যেন সরকারি এবং আধা সরকারি কোন বাহিনীতে চাকরি করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ তথ্য ব্যাপক প্রচারিত হয় ফলে তাদের উপর ক্ষোভ ছিল প্রচন্ড মাত্রায়।
তিনি বলেন তাই আমরা মনে করেছিলাম অতীতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল যেমন নাসিরনগর, কুমিল্লায়, চৌমুহনী, দেড়াইশাল্লায় গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল এরকম একটা ঘটনা ঘটতে পারে। তো আমরা দেখলাম যেদিন শেখ হাসিনার পতন হলো সেদিন বিএনপি এবং জামাত নেতারা তাদের কর্মীদেরকে বিভিন্ন মন্দির পাহারা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং হিন্দু মহল্লায় টহল দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সেই কারণে হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের মাত্রাটা যেই পরিমাণে মানুষ আশঙ্কা করেছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তারপরেও সারা বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি জেলায় কিছু আওয়ামী হিন্দু নেতা এবং একই সঙ্গে কিছু নিরীহ হিন্দু মানুষের বাড়িতে হামলা হয়েছে যাদের জমি জমা নিয়ে পূর্ব থেকেই বিরোধ ছিল। তিনি উল্লেখ করেন বাগেরহাটে একজন খুন হয়েছে যার দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল সেটিকে কাজে লাগানো হয় এই সময়। বরিশালে এক হিন্দু বাড়িতে চাঁদা চেয়েছে বিএনপির নেতা বলে পরে দেখা যায় তিনি বিএনপির লোক নয় তিনি আওয়ামী লীগের। এছাড়াও একটি মন্দিরে হামলা করতে এগিয়েছে সরাসরি বিএনপির গেঞ্জি গায়ে দিয়ে কিন্তু পরে দেখা গেল এক আওয়ামী লীগতার সেখানে তাকে পাঠিয়েছে। আজকের সমকাল পত্রিকায় দেখলাম যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একটি মন্দিরে বোমা হামলা করেছে তিনজন ছেলে পরে তারা ধরা পড়েছে দেখা গেল আওয়ামী লীগের।
মূল বিষয়টা হচ্ছে যেহেতু আওয়ামী লীগ এখন মাঠে নাই এবং তারা মাঠে দাঁড়াতে পারছে না তাই তারা তাই হিন্দুদের উপরে ভর করে মাঠ দখল করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি অরাজকতা তৈরী করার চেষ্টা করছে বলেও অনেকে মনে করেন।