সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কোনো ভুল করে থাকলে, তার জন্য প্রকাশ্যে তরুণ প্রজন্মের কাছে পলকের করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
জাতীয় শোক দিবস স্মরণে নাটোরের সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকালে নিজ বাসভবনে পলক এসব কথা বলেন।কোনো ভুল বা ব্যর্থতা হলে তার দায় তাদের এবং এ জন্য শেখ হাসিনাকে ‘ভুল না বুঝতে’ও তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক আরও বলেন, ‘ইন্টারনেট ব্যাহত হওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমি নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি। যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকা সিংড়া উপজেলার আয়োজিত স্বরণ সভায় বলেন,’তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে দূরত্ব যেটা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা কখনও তাদের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা সমাধান করতে হবে।’
সিংড়া উপজেলার আওয়ামী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যের শুরুতে জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ‘আমরা এমন একটি সময়ে আমাদের এই শোকসভা, আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছি, উপস্থিত হয়েছি, যখন আমাদের এই বাংলাদেশ, শিশু, কিশোর, কিশোরী, আমাদের সন্তানেরা একটি আন্দোলনে আছে। সেই সময়ে দেশে–বিদেশে স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে অশান্ত করা ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার।’
সবাইকে শতর্ক ও সচেতন থাকার আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি নিরাপদ না থাকেন, তাহলে বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে না। বাংলাদেশে হামিদ কারজাই মার্কা সরকার বসানোর জন্য কিছু মুখোশধারী, চক্রান্তকারী টিভিতে ভালো ভালো মিষ্টি কথা বলছেন। এ ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করতে সময় লাগবে।‘আমাদের সামনে উদাহরণ আছে সিরিয়া, ইরাক, মিশর। কীভাবে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সেই দেশের সরকার, সেই দেশকে কীভাবে ধ্বংস করে গোটা প্রজন্মকে গত ২০/৩০ বছরে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য,দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা শুরু হলে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে ৩ জুলাই দুপুর পর্যন্ত দেশের বহুল প্রচলিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ ছিল। গত ৩১ জুলাই বেলা ২টার পর থেকে তা চালু হয়। আবার শুক্রবার দুপুরের দিকে মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক ও রাশিয়াভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে তা আবার চালু হয়েছে।