বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২১ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর এই প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।
রোববার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং তিনি গত রাতে, তাঁদের দলের নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা বিএনপি নেত্রীকে মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
ইশতিয়াক আজিজ উলফাত উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাঁদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং স্বশরীর সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ওই সমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেবেন।
২১ ডিসেম্বর বেলা দুইটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এর অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ওই সমাবেশের আয়োজন করছে।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি জানান, মুক্তিযোদ্ধারা সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসবেন এবং ২১ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দেবেন।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের এক সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি।
দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। সেই থেকে ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার।
আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের পতন হয় গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে। এর পরদিনই খালেদা জিয়াকে এক নির্বাহী আদেশে ৬ আগস্ট মুক্তি দেওয়া হয়।
বঙ্গভবন থেকে ৬ আগস্ট তাঁর মুক্তির ব্যাপারে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিন বাহিনীর প্রধানেরা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়া এক যুগ পর গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এখন সাত বছর পর ২১ ডিসেম্বর তিনি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে, অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের মাধ্যমে দীর্ঘ সাত বছর পর খালেদা জিয়া মুক্ত পরিবেশে জনসমক্ষে বা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসছেন।’
1 thought on “খালেদা জিয়া সাত বছর পর জনসমক্ষে”