নিজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় আসামি। পুলিশের খাতায় রয়েছে অস্ত্র, মাদকসহ আরও তিন মামলা। তাঁর নাম কফিল উদ্দিন। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ–অর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন মিছিল–সমাবেশে তাঁর সঙ্গে যোগও দিয়েছেন। নিজের হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল ছবিতে বাবরের সঙ্গে তাঁর ছবিও আছে। সেই কফিল যুবলীগ কর্মী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ আওয়ামী, যুবলীগের নেতা–কর্মীসহ ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন চট্টগ্রাম আদালতে।
তবে পুলিশের তথ্য মতে, কফিল নিজেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগের এক মামলায় আসামি। ২৭৮ জনকে আসামি করে গত ১০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন মো. রাইয়ান নামের এক যুবক।
গত সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে মামলা করেন কফিল উদ্দিন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যুবলীগের কর্মী হয়ে মামলার বিষয়টি এখন চট্রগ্রামের পুরো শহর জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে। তবে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন। দেশ স্বাধীন করেছেন ছাত্র–জনতা। নিজেও আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তিনি।মামলা কোনো সুবিধার জন্য করেননি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান, এম এ মোতালেব, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, পিবিআইয়ের সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি ওবায়দুল হক, জাহিদুল কবির, মোহাম্মদ মহসীন, নেজাম উদ্দিন, এসআই খাজা এনাম এলাহী, বোরহান উদ্দিনসহ ২৬ পুলিশ কর্মকর্তা। আরও রয়েছে, সাবেক কাউন্সিলর শৈবাল দাশ, ওয়াসিম উদ্দিন, মোবারক আলী, ছাত্রলীগের নগর শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিমকেও আসামি করা হয়।
বাদী মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নগরের নিউমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় অংশ নেন। ওই সময় আসামিরা গুলি করেন, যার হুকুমদাতা আসামিদের কয়েকজনের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় এই হামলা হয় । ককটেল বিস্ফোরণও ঘটান। এতে কফিল হাতে আঘাত পান। ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি হন। ঘটনায় জড়িত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও সুস্থ হতে সময় লাগায় মামলা করতে দেরি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কফিল নগরের নন্দনকানন এলাকায় একটি থাই অ্যালুমিনিয়ামের দোকানে চাকরি করেন। নগরের কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র, মাদকসহ তিনটি মামলা এবং আনোয়ারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। গ্রেপ্তার হয়ে একাধিকবার কারাগারেও গেছেন। চট্টগ্রাম নগরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় নেতৃত্বদানকারী যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।
আরও পড়ুন কৃষককে সরকারি পুকুরের পানি টাকা দিয়ে কিনতে হয়