গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই নিয়মিত আলোচনা হচ্ছিল শেখ হাসিনা ভারতে কতদিন অবস্থান করতে পারবেন। পূর্বের এসব আলোচনা থেকে জানা যায় শেখ হাসিনার যে কূটনৈতিক পাসপোর্ট রয়েছে তা দিয়ে তিনি ভারতে ৪৫ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন। ৪৫ দিন অতিক্রম হয়ে গেলে তিনি আর কূটনৈতিক দায়মুক্তি পাবেন না। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিন পূর্ণ হয়েছে। জানা যায় তিনি এখনো ভারত অবস্থান করছেন। তাহলে তিনি কোন আইনে ভারতে অবস্থান করছেন? এই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে সামনে আসছে।
শেখ হাসিনা কোন আইনের বলে ভারত অবস্থান করছেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বরাবর নিশ্চুপ ছিল ভারত। দিল্লি কিন্তু ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক হবে অন্তবর্তী সরকারের সঙ্গে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর বলেছেন ‘আমরা যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তার সঙ্গে কাজ করি’। শেখ হাসিনা যে ভারতে অবস্থান করছেন সেটা তিনি স্বীকার করলেও কোন আইনের ভিত্তিতে তিনি ভারত অবস্থান করছেন এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আশ্রয় দিয়েছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে শেখ হাসিনা কে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। কেননা ৪৫ দিন পার হলে ভারতে আইন অনুসারে তিনি আর কূটনৈতিক দায় মুক্তি পাবেন না। যেহেতু ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিন পার হয়ে গিয়েছে তাই তিনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই সেখানে রয়েছেন। আর এর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে হয়তো মানবিক বিষয়টি কাজ করেছে। অর্থাৎ মানবিক কারণেই শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিকভাবে রেখেছেন।
বিশ্লেষকরা আরো মনে করেন ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনা। ঘনিষ্ঠ বন্ধু মনে করার কারণেই মানবিক বিবেচনায় তাকে আশ্রয় দিয়েছেন বলে দৃশ্য তো মনে হচ্ছে। তিব্বতের দালাইলামাকেও ভারত আশ্রয় দিয়েছিল ১৯৫৯ সালে। ১৯৯২ সালে মোঃ নজিবুল্লাহ কে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের ভারতপন্থী একজন নেতা। এছাড়াও ১৯৭৫ সালে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাও ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্য, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য চেষ্টা করেছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু কোন রাষ্ট্র থেকেই আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্য কোন রাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য ভারতের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে এমন খবরও পাওয়া গেছে। সকল চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর মানবিক দিক বিবেচনা করে শেখ হাসিনা সরকারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তবে এ বিষয়ে ভারত থেকে এখন পর্যন্ত ক্লিয়ার করে কোন কথা বলা হয়নি। এগুলো মূলত বিশ্লেষকদের মতামত।
আরোও পড়ুন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন যে সব বিদেশি নেতা-নেত্রী