বাংলাদেশে বিগত কয়েক দশক ধরে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে নানা ধরনের তর্ক-বিতর্ক চলছে। বিতর্কের কেন্দ্রে যেমন ছিল শিক্ষানীতি ও শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা, তেমনই ধর্ম ও বিজ্ঞানকে আলাদা করে বিবেচনা না করার কারণে এখনো শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের তেমন গুরুত্ব হয়ে ওঠেনি। যুগ যুগ ধরে কেন এই বিতর্কের মিছিল চলছে, আর তার সমাধানই-বা কী হতে পারে, তা নিয়ে লিখেছেন নাদিম মাহমুদ।
পাঠ্যবই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থেমে নেই। শেখ হাসিনা সরকারের সর্বশেষ করা ‘নতুন শিক্ষাক্রম’কে বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রণীত বইগুলোর পরিমার্জন ও সংস্করণের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তা ‘ধর্মীয় গোষ্ঠীদের’ বাধার মুখে বাতিল করা হয়েছে। পাঠ্যবইয়ে কারা থাকবে, কীভাবে লেখা হবে, তা নিয়ে এর আগে দেশে অনেক লেখা লেখি হয়েছে।
বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে পাঠ্যপুস্তককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে শিক্ষার্থীদের ‘ধর্মকে’ অনুসরণ করানো যাবে। আসলে কি তা-ই? পাঠ্যপুস্তকে ‘ধর্মীয়’ অনুশাসনের অংশ ধরা হলে গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার তাদের প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে সামনে আনা হয়েছে, স্কুলের শপথকে পরিবর্তন করেছে, তাতে কি আমাদের সন্তানদের শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে, নাকি মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতে পেরেছে? দিন শেষে ‘রাজাকার’ শব্দটি ব্যবহারের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শেখ হাসিনা সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছে।
এই দেশে যখনই পাঠ্যপুস্তকে সংস্কার করার চেষ্টা হয়েছে, তখন থেকে নানা কারণে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কখনো এনসিটিবি নিজে করেছে, আবার কখনো ধর্মীয় ভাবাদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে গিয়ে সরকার করেছে।
পাঠ্যপুস্তকে যেসব বিতর্ক ছিল
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ধর্মভিত্তিক দলগুলো একমুখী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। কবির চৌধুরী শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে বলার চেষ্টা করেছিল একমুখী শিক্ষানীতি বাস্তবায়িত হলে দ্বীনি শিক্ষা বাদ দিয়ে খোদাদ্রোহী শিক্ষা চালু হবে (প্রথম আলো ৮ আগস্ট ২০০৯)। এই বাধার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। ২০১১ ও ২০১২ সালে পাঠ্যবইগুলোয় ব্যাপক বানান ভুল পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বইগুলো ছিল ভুলে ভরা, যা নিয়ে সেই সময় পত্রপত্রিকায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল।
১। ২০১১ ও ২০১২ সালে পাঠ্যবইগুলোয় ব্যাপক বানান ভুল পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বইগুলো ছিল ভুলে ভরা, যা নিয়ে সেই সময় পত্রপত্রিকায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল।
২। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। বিভিন্ন সরকার তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের ইতিহাসের অংশগুলো পরিবর্তন করেছে।
৩। বইয়ের কাজ মস্তিষ্ককে শাণিত করা। এই শাণিতকরণের জন্য প্রয়োজন নতুন ও পরীক্ষালব্ধ জ্ঞানের উন্মেষ। সেটা করতে না পারলে আমাদের চিন্তাচেতনার বিকাশ সম্ভবপর হবে না।
২০১৭ সালে ইসলামপন্থী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের পছন্দকে সরকার গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকগুলোয় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল। কোমলমতি শিশুদের জন্য রচিত প্রথম শ্রেণির বাংলা বইয়ে বর্ণ শেখার কৌশলে ‘ও’ বর্ণটি দিয়ে ‘ওড়না’ পরিচয় করানো হয়েছিল, যা লিঙ্গবিষয়ক সংবেদনশীলতার প্রকাশ। এ ছাড়া ‘অ’ বর্ণে ‘অজ’ হিসেবে ছাগলের গাছে ওঠার ছবি নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল। এ ছাড়া বাংলা পাঠ্যবই থেকে হিন্দু ও নিধর্মী লেখকদের বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কালিদাস রায়, সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, সুকুমার রায়, হুমায়ুন আজাদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জ্ঞানদাস ও ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের লেখা বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল (বিডিনিউজ, জুলাই ৭, ২০১৭)।
পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক শুরু হয় ২০২৩ সালে। বছরের শুরুতে নতুন শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে হুবহু চুরি করে অনুবাদ করা হয়, যা একাডেমিক ভাষায় প্লেজারিজম বা চৌর্যবৃত্তির মধ্যে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রথম আলোয় লেখার পর দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বইটির সম্পাদকেরা গণমাধ্যমে ক্ষমা চান, তবে একই সম্পাদকের রচনায় চলতি বছর নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়েও একই ধরনের ভুলভ্রান্তি দেখা যায়। ভারতের কোচিং সেন্টারের শিক্ষা উপকরণ থেকে কপি করা অংশ এবং ইন্টারনেট থেকে উৎসের প্রাপ্তি স্বীকার না করে অনুবাদ করা হয়েছিল (প্রথম আলো, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪)।
পাঠ্যপুস্তকে রাজনীতিকীকরণের ছোবল
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। বিভিন্ন সরকার তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুযায়ী পাঠ্যবইয়ের ইতিহাসের অংশগুলো পরিবর্তন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, স্বাধীনতার ঘোষক কে ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা কতটা ছিল, জিয়াউর রহমানের ভূমিকা কতটা স্বীকৃত হবে—এ নিয়ে পাঠ্যবইগুলোতে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক ছিল।
২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাঠ্যপুস্তকে একধরনের পরিবর্তন এসেছিল। আমার স্পষ্ট মনে আছে, সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের একটি অধ্যায়ে বিভিন্ন নেতাদের রাজনৈতিক অবদানবিষয়ক জীবনী পড়ানো হয়েছিল। সেখানে জিয়াউর রহমানের পরিচ্ছেদে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল, আমাদের মহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে পরিচিত করে দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেই কথাগুলোকেই বেদবাক্য হিসেবে পাঠ করেছি। আমাদের বেশ কিছু প্রজন্ম ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হিসেবে তাঁর নামই জানত।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরই ইতিহাস থেকে ধীরে ধীরে জিয়াউর রহমানকে উঠিয়ে দেওয়া হলো। নতুন ষষ্ঠ শ্রেণির ‘স্বাধীন বাংলা বেতার’ অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান সর্ব প্রথম বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। যা পরে আরও অনেকেই পাঠ করেছেন বাক্য দিয়ে সঠিক ইতিহাসকে ঢেকে ফেলা হলো। সেখানে জিয়াউর রহমানের নাম দিলে আহামরি কিছুই হত না। আমরা যদি সন্তানদের সত্যিই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে চাই, তাহলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণাটি’কে পাঠ করলেন সেটির পুরোপুরি ইতিহাস জানানো উচিত ছিল।
এছাড়া বইয়ের ভেতরই নয়, অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে বইগুলোর শেষ পাতার প্রচ্ছদে সরকারপ্রধানের ছবি, অমৃত বচন প্রকাশ ‘দলীয় রাজনীতিকীকরণের’ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে, উন্নয়নের ছবি, অথচ এই নোংরামি হওয়ার কথা ছিল না। পাঠ্যবই সবার জন্য। ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ যেমন আগের সরকার করেনি, তেমনই শেখ হাসিনাও ঠেকাননি; বরং রাজনৈতিক মতাদর্শকে ফুলেফেঁপে প্রকাশের ভঙ্গিমা আমাদের মানসিক দৈন্যকে প্রগাঢ় করে তোলে।
পাঠ্যবইয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞানে বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক
ধর্ম ও বিজ্ঞান দুই ক্ষেত্রই মানুষের জীবনদর্শন, চিন্তাভাবনা এবং মূল্যবোধের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ধর্মীয় ব্যাখ্যা মূলত সৃষ্টিকর্তার বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করলেও বিজ্ঞান মূলত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত তথ্য এবং যুক্তির ওপর নির্ভরশীল। পাঠ্যবইয়ে ধর্মীয় বিষয়বস্তু সংযোজনের সময় ধর্মীয় সংবেদনশীলতার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ বারবার উঠেছে। কখনো কখনো পাঠ্যবইয়ে ব্যবহার করা কিছু শব্দ বা বিষয়বস্তু ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
যেমন পাঠ্যবইয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞান বিতর্কের প্রধান কারণ হলো সৃষ্টিতত্ত্ব ও বিবর্তনবাদ। ধর্মীয় গ্রন্থে বিশ্ব ও প্রাণীর সৃষ্টির বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা সাধারণত ঈশ্বর বা স্রষ্টার সঙ্গে সংযুক্ত। অন্যদিকে, বিজ্ঞান বিশেষ করে চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বলে যে প্রজাতিরা প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে। সদ্য বাতিল হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে মানুষের সৃষ্টির ধাপের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যদিও আমরা আমাদের সময়ে ডারউইনতত্ত্ব পাঠ্যবইয়ে পড়েছি, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আলেমদের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে দেশে বিতর্কের ফলে এনসিটিবি ডারউইন বিবর্তনবাদ পাঠ্যবই থেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়।
এর বাইরে চলতি বছর সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের শরীফ বনাম শরীফা গল্প নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু নিয়ে ধর্মীয় বিশ্বাসবোধ আহত হওয়ার প্রেক্ষিতে সরকার শেষ পর্যন্ত গল্পটি প্রত্যাহার করে নেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে পাঠ্যপুস্তকে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।
বিতর্ক ঠেকাতে যা করতে হবে
সরকারকে ঠিক করতে হবে, আমাদের প্রজন্মকে তারা কোন শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে গড়তে চায়। অসাম্প্রদায়িক চেতনা আর ধর্মীয় মূল্যবোধের মিশেলে হওয়া পাঠ্যপুস্তক যেকোনো সময়ে গ্রহণযোগ্য সমীকরণে সায় দেয়। পাঠ্যবই যতটা আমাদের ধর্মীয় অনুসারী করে তোলে, তার চেয়ে বেশি জ্ঞানের বিকাশ ঘটায়। তাই পাঠ্যপুস্তকের লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত, কীভাবে আমাদের জ্ঞানের উন্মেষ ঘটানো যাবে, সমস্যা সমাধান করা যাবে কীভাবে , আগামী বিশ্বের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা যাবে কীভাবে ।
তাই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে একটি টেকসই নীতিমালা থাকা উচিত। যেহেতু পাঠ্যবইগুলোয় ধর্ম, বর্ণ, বিজ্ঞান, লিঙ্গ, মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো সম্পৃক্ত থাকে, তাই পাঠ্যবই রচনার সময় এসব অংশীজনের অংশগ্রহণ থাকাটাও জরুরি। ইসলাম ধর্মসহ প্রতিটি ধর্মের পণ্ডিতদের চিন্তাচেতনা শুনতে হবে। রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের অন্যতম স্থান হলো শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত পাঠ্যবই। তাই আলেম সমাজ, পণ্ডিত সমাজ, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সর্বজনীন নীতিমালা থাকবে, যেখানে আমাদের রাষ্ট্র বিনির্মাণে কৌশলগত উপকরণ হিসেবে পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাস সাজাব।
তাই এ ধরনের বিতর্ক এড়ানোর জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে, যেখানে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে আলাদা আলাদা ক্ষেত্র হিসেবে পাঠ্যপুস্তকে উপস্থাপন করা প্রয়োজন, যাতে করে বিজ্ঞানকে তার নিজস্ব বিশ্বাস যোগ্যতা এবং যুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরবে, আর ধর্মীয় মূল্যবোধকে নিজ নিজ বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক বা ঐতিহাসিক নৈতিকতার দিক থেকে আলোচনা করা যাবে।যার ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্ম এবং বিজ্ঞানকে আলাদা আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে সবাই বোঝার সুযোগ পাবে।
পাঠ্যবইয়ে রাজনীতিকীকরণ কিংবা ধর্মীয় প্রচারণার সন্ধিস্থল হওয়ার সুযোগ নেই, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এই অঙ্গীকার থাকতে হবে। পাঠ্যবই সরকারের ছবি কিংবা প্রচারণা বন্ধে আইন প্রণয়ন করা জরুরি। পাঠ্যবই পড়ে বিকশিত জ্ঞানই ঠিক করবে, তারা কী পছন্দ করবে আর কী ত্যাগ করবে। মনে রাখতে হবে, পাঠ্যপুস্তক পড়ে কেউ আস্তিক বা নাস্তিক হয় না।
বইয়ের কাজ আপনার মস্তিষ্ককে শাণিত করা। এই শাণিতকরণের জন্য প্রয়োজন নতুন ও পরীক্ষালব্ধ জ্ঞানের উন্মেষ। সেটা করতে না পারলে আমাদের চিন্তাচেতনার বিকাশ সম্ভবপর হবে না। ঘৃণা কিংবা বিদ্বেষ ছড়ানো কখনোই পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু হতে পারে না। তাই যুগোপযোগী পাঠ্যবই প্রণয়নে সমাজের সব শ্রেণির পেশাজীবীর সহায়তা করা প্রয়োজন, যাতে আমাদের সন্তানদের জন্য কার্যকরী ও শক্তিশালী শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার উপকরণ তৈরি করা সম্ভব হয়।
1 thought on “পাঠ্যবইয়ের ‘এত সব বাধা’ দূর হবে কীভাবে”