স্বাধীনতার ৫১ বছর ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উত্তর পাড়ার বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেগমের সন্তান মেরিনা খাতুন। আজ রোববার তাড়াশ উপজেলা ডাকঘর থেকে তিনি চিঠিটি গ্রহণ করেন।এখন থেকে তিনি পিতার নাম ছাড়াই সব সুবিধা পাবেন তিনি।যুদ্ধশিশু মেরিনার কোথাও পিতার নাম লেখার প্রয়োজন হবে না। পিতার নাম ছাড়াই তিনি রাষ্ট্রের সব সুবিধা বা অধিকার ভোগ করতে পারবেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮৯তম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।এর আগে ২০২২ সালে জামুকার ৮২তম বৈঠকে মেরিনা খাতুনের.
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে নির্যাতিত বীরাঙ্গনার সন্তানদের ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
জামুকা সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেগমের সন্তান মেরিনা খাতুন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ২০২২ সালের গত ৮ সেপ্টেম্বর যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদনটি পাঠান। আবেদনে মেরিনা খাতুন উল্লেখ করেন, ‘আমার মাতা মৃত পচি বেগমকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেন। যার গেজেট নম্বর ২০৫। সম্প্রতি আমার মা পচি বেগম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেও আমার কোনো পরিচয় আজও আমি নিশ্চিত করতে পারিনি।’
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে তাড়াশের উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত ফাজিল আকন্দের স্ত্রী পচি বেওয়াকে বাড়ি থেকে স্থানীয় রাজাকাররা অস্ত্রের মুখে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে আটক রেখে পাকিস্তানি বাহিনী তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। এরপর জন্ম হয় যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুনের। তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কামান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আরশেদুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রথম ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে মেরিনা খাতুন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি তাঁকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাতা ও তার সন্তানদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।