ইউরোপের এই ৫ বৃত্তির আবেদন

ইউরোপের এই ৫ বৃত্তির আবেদন চলছে

শিক্ষা
Spread the love

ইউরোপের দেশগুলোয় স্নাকোত্তরের জন্য অনেকে পাড়ি জমাতে চান। কিন্তু মুশকিল হলো, অনেকে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য বৃত্তি খুঁজতে গিয়ে । চলুন জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয় ৫ বৃত্তির কথা, যেগুলোর আবেদন গ্রহণ চলছে এখন।

১. ইরাসমাস মুন্ডুস বৃত্তি (ইউরোপীয় ইউনিয়ন)

ইউরোপের বৃত্তিগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইরাসমাস মুন্ডুস জয়েন্ট মাস্টার্স স্কলারশিপ। এই বৃত্তির আওতায় ১৩০টির বেশি মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের সুযোগ থাকে। প্রতিবছর সারা বিশ্ব থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী এ বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পান।

অন্যান্য বৃত্তির তুলনায় ইরাসমাস মুন্ডুস কিছুটা আলাদা। প্রথমত, এটি শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রদত্ত এই বৃত্তির বিশেষত্ব হলো, মাস্টার্সের একেকটি সেমিস্টার ভিন্ন ভিন্ন দেশে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়। তা ছাড়া এ বৃত্তির আওতায় গতানুগতিক বিষয়গুলোর তুলনায় বিশেষায়িত মাস্টার্স প্রোগ্রামই বেশি।

সুযোগ-সুবিধা: থাকা–খাওয়া বাবদ মাসিক উপবৃত্তি,টিউশন ফি এবং ভ্রমণের খরচ এর অন্তর্ভুক্ত।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য স্বতন্ত্রভাবে আবেদন করতে হয়। তবে সাধারণত ইউরোপ পাস ফরম্যাটের সিভি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, আইইএলটিএস বা অন্য ইংরেজি ভাষার পরীক্ষার ফলাফল, রেসিডেন্সি সার্টিফিকেট বা নাগরিকত্ব সনদ এবং সব ধরনের প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্যই সুপারিশপত্র প্রয়োজন।

আবেদনের সময়সীমা:  সাধারণত  অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন প্রক্রিয়া চলমান থাকে। প্রতিটি স্কলারশিপের জন্য প্রোগ্রামের সময়সীমা ভিন্ন।

২. সুইডিশ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপ (সুইডেন)

বিশ্বের ৩৩টি দেশের শিক্ষার্থীদের সুইডেনে পড়াশোনার সুযোগ করে দেয় সুইডিশ ইনস্টিটিউট আয়োজিত এ বৃত্তি । ভালো খবর হলো,বাংলাদেশও ৩৩টি দেশের মধ্যে আছে । ৭০০টি মাস্টার্স প্রোগ্রাম অর্থায়নে সুইডেনের প্রায় সাহায্য করে এ বৃত্তি। তবে আবেদন করার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে, আপনার পছন্দের মাস্টার্স প্রোগ্রামটি এ বৃত্তির আওতায় আছে কি না। আর এ বৃত্তি পেতে হলে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের অবশ্যই অন্তত ৩ হাজার ঘণ্টা চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সুযোগ-সুবিধা: ভ্রমণ খরচ হিসেবে এককালীন প্রায় ১ হাজার ৪০০ ডলার , মাসিক উপবৃত্তি, সম্পূর্ণ টিউশন ফি এবং নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ফরম্যাট অনুযায়ী কাজের অভিজ্ঞতার সনদ, সিভি, দুটি সুপারিশপত্র ও মোটিভেশন লেটার।

আবেদন সময়সীমা:  সুইডিশ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে আবেদনের সময়সীমা ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে সুইডিশ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপে আবেদন করতে হবে ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

৩. স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গারিকাম স্কলারশিপ (হাঙ্গেরি)

হাঙ্গেরির এ বৃত্তি দেয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃত্তির আওতায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে আবেদন করা সম্ভব। মোট ৮০টি দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তিতে আবেদন করতে পারেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বৃত্তির জন্য অবশ্যিই, ১৮ বছরের বেশি হতে হবে আবেদনকারীর বয়স।

সুযোগ-সুবিধা: থাকা–খাওয়া বাবদ মাসিক উপবৃত্তি, সম্পূর্ণ টিউশন ফি ও চিকিৎসা বিমা এই বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে আছে মোটিভেশন লেটার, আইইএলটিএসের ফলাফল, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, মেডিকেল সনদ ও পাসপোর্টের কপি।

আবেদন সময়সীমা: ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি এ বৃত্তির জন্য আবেদনের শেষ সময় ।

৪. ডিএএডি স্কলারশিপ (জার্মানি)

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৃত্তিদাতা সংস্থাগুলোর মধ্যে একটি পরিচালনা করে এই স্কলারশিপ। বছরে প্রায় এক লাখ জার্মান ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে এ সংস্থা বৃত্তি দেয়। আবেদন করতে হলে আপনার স্নাতক ডিগ্রিটি অবশ্যই জার্মানিতে স্বীকৃত হতে হবে।

সুযোগ-সুবিধা: বার্ষিক পড়াশোনার খরচ,  চিকিৎসাবিমা, মাসিক উপবৃত্তি,  ভ্রমণ খরচ ও এ বৃত্তির মাধ্যমে দেওয়া হয়।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ডিএএডি স্কলারশিপের আওতায় ৮৬টি ভিন্ন বৃত্তি দেওয়া হয়। প্রতিটির জন্য কাগজপত্রের তালিকা আলাদা। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ইত্যাদি প্রয়োজন হয়।

আবেদন সময়সীমা: এ বৃত্তির বিভিন্ন প্রোগ্রামে আবেদনের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

৫. আইফেল এক্সিলেন্স স্কলারশিপ (ফ্রান্স)

আইফেল এক্সিলেন্স স্কলারশিপটি ইউরোপ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক ফরাসি মন্ত্রণালয় পরিচালনা করে। মাস্টার্সের আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ বয়স ২৭ এবং পিএইচডির জন্য সর্বোচ্চ বয়স ৩২। অন্যান্য বৃত্তির তুলনায় এর আবেদনপ্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। সরাসরি ‘ক্যাম্পাস ফ্রান্স’ অথবা ফরাসি দূতাবাসে এর অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।  এ ছাড়া স্কলারশিপের আবেদনটি  শিক্ষার্থীর পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জমা দিতে হয়।

সুযোগ-সুবিধা: টিউশন ফি, মাসিক উপবৃত্তি, চিকিৎসাবিমা ও ভ্রমণের খরচ এ বৃত্তির আওতায় পড়ে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ‘ক্যাম্পাস ফ্রান্স’ ,কে একাডেমিক তালিকাভুক্তি সার্টিফিকেট, আবেদনের জন্য রেসিডেন্সি সনদ ইত্যাদি পাঠাতে হয়।

আবেদন সময়সীমা: ২০২৫ সালের ৮ জানুয়ারি আবেদনের শেষ সময় ।

আরও পড়ুন নবম-দশম শ্রেণির বইতে ৭ গদ্য, ৪ কবিতা বাদ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *