পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগরে একটি ৯-১০ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মেয়েটি শুক্রবার রাতে টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে তার দেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। তারা আরও অভিযোগ করেছে, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ তাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে বিলম্ব করেছিল।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
গত শুক্রবার বেলা আড়াইটায় কোচিং সেন্টারে পড়তে যায় চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জয়নগরে একটি ৯-১০ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মেয়েটি শুক্রবার রাতে টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে তার দেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছে, মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং পুলিশের দায়িত্বহীনতার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। শেষ রাতে একটি জলাশয় থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুর ক্ষতবিক্ষত দেহ।
এরপর মরদেহ রাখা হয় পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে। এ সময় হাসপাতালের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ করেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তারা আরও অভিযোগ করেছে, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ তাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে বিলম্ব যদিও পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ১৯ বছরের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে।এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে।
স্থানীয় এক পুলিশ আউটপোস্টে আগুন দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মহিলারা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে পুলিশের অবহেলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। বিক্ষোভকারীরা আরও দাবি জানায়, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ওই শিশুর ময়নাতদন্ত করতে হবে কোনো নামী হাসপাতালে। তা নাহলে,পূর্বের আর জি কর হাসপাতালের ধর্ষণ ঘটনার মতো সব তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়ে যাবে।
বিভিন্ন সংগঠনের দাবির মুখে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় রোববার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এক আদেশে বলেন, ওই শিশুর ময়নাতদন্ত হবে পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীর অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস-এইমস হাসপাতালে। অবশ্য ওই হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সার্বিক অবকাঠামো না থাকায় তবে ময়নাতদন্ত হবে কল্যাণী জেএমএন হাসপাতালে। তবে ময়নাতদন্ত করবেন এইমস-এর চিকিৎসকেরা।
এ সময় জেএমএন হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত থাকতে পারবে না। ময়নাতদন্ত করার সময় উপস্থিত থাকবেন বারইপুরের এসিজেম বা অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। ময়নাতদন্ত হবে ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে। এ সময় শিশুর মা-বাবাকে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিচারপতি পুলিশকে প্রশ্ন করেন, কেন এই মামলায় শিশুদের যৌন নির্যাতনের আইন ‘পকসো’র ধারা যুক্ত করা হয়নি? বিচারপতি এই মামলা অবিলম্বে পকসো আদালতে স্থানান্তরেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিজেপির যুব মোর্চা কুলতলি থানা ঘেরাও করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া বিজেপির যুব মোর্চার নেতা-কর্মীরা বিকেলে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
অপরদিকে, শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া আর জি কর হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে আমরণ অনশনের রোববার ছিল দ্বিতীয় দিন। জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আমরণ অনশন মূলত ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ।
বিজেপি নেতারা ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও পুলিশ ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। রাজ্যপাল মন্তব্য করেছেন যে, এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে কারণ পুলিশ সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয় জনতা দাবি করেছে, দোষীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া হোক এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক যারা অভিযোগ নিতে দেরি করেছিল
আরও পড়ুন লেবাননে ইসরায়েলের তীব্র হামলা, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা
1 thought on “পশ্চিমবঙ্গে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ”