বিয়ে করা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং এর বিভিন্ন ফলাফল বা প্রভাব থাকতে পারে। এটি ব্যক্তি বিশেষে, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এবং সম্পর্কের ধরনে ভিন্ন হয়। বিয়ে করার পূর্বে ৮ প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন।
একজন ভালো সঙ্গীর সাথে বিবাহ সুখী ও মানসিক শান্তি বয়ে আনতে পারে। সম্পর্ক বজায় রাখা ও দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। অনেক সমাজে বিয়ে করার মাধ্যমে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে । দুই পরিবার ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সংযোগ তৈরি হয়। বিয়ে করার মাধ্যমে দুই জনের উপার্জন একত্রিত হয়ে অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি হতে পারে।
দাম্পত্য জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত দায়িত্ব, যেমন বাড়ি চালানো, সন্তান লালন-পালন, এবং অন্যান্য পরিবারের খরচ বেড়ে যেতে পারে। অনেকেই বিয়ের পর সন্তান ধারণ করেন, যা তাদের জীবনের নতুন ধাপ হিসেবে কাজ করে। স্বামী-স্ত্রী উভয়েই নিজেদের পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হন। একজন ভালো জীবনসঙ্গী জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমর্থন ও উন্নতির জন্য সহায়তা করতে পারে। অনেক সময় বিয়ের পর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা কিছুটা সীমিত হতে পারে, কারণ পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজন হয়।
আসুন বিয়ে করার ইচ্ছে হওয়ার পূর্বে কয়েকটি নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
একটা নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছানোর পর প্রত্যেক মানুষের বিয়ে না করা পর্যন্ত এই সমাজে বা এই দেশে সবাইকে একটি প্রশ্নের সামনে উপস্থিত হতে হয়—‘বিয়ে করবে কবে?’ আপনি ‘সেলিব্রিটি’ হোন কিংবা ‘আমজনতা’, এ প্রশ্ন ‘কমন’ পড়বেই। বিয়ে মানে তো জীবনের এক নতুন অধ্যায়। এই অধ্যায় শুরু হওয়ার জন্য কিন্তু কেবল ‘বয়স’ হলেই চলে না, সবদিক থেকে নিজেকে ‘প্রস্তুত’ করে নিতে হয়।
ধরে নেওয়া যাক, আপনার বিয়ের বয়স হয়েছে। পরিবার থেকে বিয়ের কথা বলছে, আর্থিক দিক থেকেও কোনো বাধা নেই। আপনি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত?
নিজেকে যাচাই করে নিন আজ এই আট প্রশ্নে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য রয়েছে চারটি উত্তর। প্রশ্ন গুলোর উত্তরের সঙ্গে মিলিয়ে নিন আপনার বিয়ের স্বীদ্ধান্ত।
১. আপনার কাছে বিয়ের অর্থ কী?
ক. যেকোনো পরিস্থিতিতে দুজনে পাশে থাকার অঙ্গীকার
খ. জীবনের প্রয়োজনে একজন সঙ্গীর সঙ্গে পথচলা
গ. দারুণ রোমান্টিক ব্যাপার
ঘ. জীবনে একটা বাড়তি ঝামেলা
২. অচেনা মানুষের সঙ্গে একই জায়গায় থাকার ব্যাপারে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
ক. দারুণ
খ. ভালো
গ. মোটামুটি
ঘ. ভীষণ কষ্টকর
৩. কাছের মানুষদের কারও সঙ্গে মতের অমিল হলে আপনি কী করেন?
ক. বিষয়টি নিয়ে কাছের মানুষের সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় তাঁর কথা বলেন
খ. রাগারাগি, চিৎকার-চেঁচামেচি করেন
গ. কোনো না কোনো সময় বিষয়টি নিয়ে তাঁকে খোঁচা মেরে কথা বলেন
ঘ. তাঁকে এড়িয়ে চলেন
৪. বিয়ের পর আর্থিক ব্যাপারগুলো কীভাবে গুছিয়ে নেওয়া উচিত ?
ক. যাঁর রোজগার যেমনই হোক, সম্মিলিতভাবে পরিকল্পনা করে বিষয়গুলো সামলে নেওয়া উচিত
খ. দুজনের মধ্যে যাঁর রোজগার বেশি, তাঁরই বেশি দায়িত্ব নেওয়া উচিত
গ. কার ভাগে কতটুকু খরচ, পরিস্থিতি অনুযায়ী সে ব্যাপারে সবাই আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত
ঘ. নিজ নিজ খরচে চলা উচিত
৫. পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী ?
ক. বাড়ির সবার সঙ্গে আলোচনা করে সবার চাহিদার দিকে যত্নবান হোন
খ. সবার কথা শোনেন, কিন্তু নির্দিষ্ট কারও কথায় বেশি গুরুত্ব দেন
গ. নিজে যা ভালো বোঝেন, সেটাই করেন
ঘ. আপনি এসবের মধ্যেই থাকেন না
৬. সাংসারিক কাজের ব্যাপারে আপনার ভাবনা কী?
ক. দুজনে মিলেমিশে সব কাজ করবেন
খ. এত দায়িত্ব না নিলেও ক্ষতি নেই, ঘরের কাজের সহকারী রেখে নিলেই চলবে
গ. আপনার বিয়ে হবে যাঁর সঙ্গে, তিনিই এগুলো দেখবেন
ঘ. বাজার/রান্নার জন্য আপনার জন্ম হয়নি
৭. জীবনে যখন অফুরন্ত অবসর আসবে, সেই সময়টা কীভাবে কাটাতে চান?
ক. জীবনসঙ্গীর সঙ্গে
খ. পরিবারের অন্যদের সঙ্গে
গ. বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে আড্ডা দিয়ে
ঘ. একা, নিজের মতো
৮. ‘শ্বশুরবাড়ি’ সম্পর্কে আপনি কী ভাবেন?
ক. পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে
খ. অনেক বেশি দায়িত্ব আসবে আপনার কাধে
গ. সবাই আপনাকে অনেক ভালোবাসবে
ঘ. অবধারিতভাবেই তাঁদের সঙ্গে খিটিমিটি লেগে থাকবে
ফলাফল
যদি ৩১ থেকে ৪০-এর মধ্যে হয় আপনার প্রাপ্ত মোট নম্বর , তবে ধরে নেওয়া যায় আপনি বিয়ের জন্য মোটামুটি প্রস্তুত।
নম্বর যদি ২৬-৩০–এর মধ্যে হয়, তাহলেও আপনার কিছুটা প্রস্তুতি আছে বলা যেতে পারে। তবে ভাবনাগুলোকে আরেকটু গুছিয়ে নিলে বিয়ের পরের জীবনটাও আরেকটু সহজ হয়ে উঠবে আপনার জন্য।
আপনার মোট নম্বর যদি হয় ২১ থেকে ২৫–এর মধ্যে, তাহলে সম্ভবত আপনি বিয়ে করতে আগ্রহী হলেও এখনো ঠিক প্রস্তুত নন। জীবন সম্পর্কে আরেকটু বাস্তব ভাবনা চর্চার প্রয়োজন আছে। সে ক্ষেত্রে আপনি আরেকটু সময় নিতে পারেন।
নম্বর যদি হয় ২০–এর কম, তাহলে সম্ভবত আপনি এখনো প্রস্তুত নন। তাই বলে আপনার বিয়ে করার সময় হয়নি—এমন সোজাসাপটা উপসংহার টানা ভুল হবে। আপাতত আপনি আত্মোন্নয়নে আরও মনোযোগী হতে পারেন।