সংস্কারের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করতে চায়

সংস্কারের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার

বাংলাদেশ
Spread the love

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথের এক মাস উপলক্ষে গতকাল( ৮ই সেপ্টেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁরা সংস্কার চান। সংস্কারের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার । সংস্কারের মাধ্যমে জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চান। এই সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে তিনি ছয়টি কমিশন গঠনের কথা বলেছেন। এছাড়া আরও কিছু সংস্কারের কথা বলেছে নোবেলজয়ী এই নেতা।

সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নামও ঘোষণা করেন। তাঁরা হলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান শাহদীন মালিক, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সরফ রাজ হোসেন ( জনপ্রশাসন সচিব ও সাবেক স্বরাষ্ট্র ) ।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশনপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শ সভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন ১ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করছি। পরে আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা ব্যবসায়ী, শ্রমিক, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সবাইকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সংস্কার আনার আহ্বান জানান। সংস্কারের কাজে রাজনৈতিক দল, সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন—এই চারটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। এর পাশাপাশি সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজন আমরা অনুভব করছি।’

আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ

ব্যাংকিং কমিশন গঠনের মাধ্যমে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ায় মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এ জন্যে নীতি সুদের হার বৃদ্ধি করে ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ সুলভ মূল্যে প্রান্তিক মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ চলমান রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে চাল ও গম আমদানির জন্য ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের জন্য ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকির তিনটি প্রোগ্রামের জন্য অতিরিক্ত ৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা  অর্থ বরাদ্দ রেখেছে সরকার।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত তিন বিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক থেকে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রিমের অর্থ পরিশোধ এবং বকেয়া পাওনা নিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

 দাবি আদায়ে ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা যথাসম্ভব সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। আমি আবারও অনুরোধ করছি, আপনারা যাতায়াতে ব্যাঘাত সৃষ্টি থেকে বিরত থাকুন।’

অর্থনীতির চাকা সচল রাখুন

ড. ইউনূস বলেন, তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প এলাকায় শ্রমিকেরা তাঁদের অভিযোগ জানাতে ক্রমাগতভাবে এই শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখতে বাধ্য করছেন। এটা অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সেটা মোটেই কাম্য নয়। আওয়ামী সরকারের রেখে যাওয়া নাজুক  অর্থনীতিতে তাঁরা প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা করছেন। ঠিক এই সময়ে শিল্পকারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে, অকার্যকর হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে। সেটা কিছুতেই কারও কাম্য হতে পারে না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিক ভাইবোনদের অনেক দুঃখ আছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে গিয়ে মূল জীবিকাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সেটা ঠিক হবে না। মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান অবশ্যই বের করা হবে। তিনি কারখানা খোলা রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মালিকপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন। কারখানা সচল রাখুন।’

সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরে তা মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। 

হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

ড. ইউনূস তার ভাষণে বলেন, ডিজিটাল বা সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অতি সত্বর এসব কালো আইন বাতিল এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন করা হবে। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ বহুল আলোচিত পাঁচ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির জন্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পয়লা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণ–আন্দোলন দমন করতে যেসব ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তার মধ্যে হত্যা মামলা ছাড়া বাকি প্রায় সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সবাই মুক্তি পেয়েছেন। 

বলপূর্বক গুম থেকে সবার সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন সনদে স্বাক্ষরের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এর ফলে স্বৈরাচার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গুম–সংস্কৃতির সমাপ্তি ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম। এ ছাড়া আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৫ বছরে গুমের প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করার জন্য কমিশন গঠন করেছি। আয়নাঘরগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

এছারাও , দেশেড় গনমাধ্যম-সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে ভাষণে উল্লেখ করা হয়।

শিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কার

শিক্ষাব্যবস্থার দিকে পূর্ণ নজর দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতিমধ্যে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। বই সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ শেষ পর্যায়ে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চ প্রশাসনিক পদগুলো পূরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা বোর্ডে দখলদারত্বের রাজনীতি বন্ধ করার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা, সমতার ভিত্তিতে

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ভারত এবং অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে সেই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে। ভারতের সঙ্গে আমরা ইতিমধ্যে বন্যা মোকাবিলায় উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আলোচনা শুরু করা হয়েছে। সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছি।’ 

ভাষণে আরও বলা হয়, ‘ আমরা জানি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার অহেতুক ও অপ্রয়োজনীয় কোটি কোটি অর্থ ব্যয়ের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দেখেছি, যেগুলো কখনোই দেশের মানুষের জন্য ছিল না, ছিল শুধু বড় ধরনের চুরি ও নিজেকে  আমিত্ব হিসেবে জাহির করা।  আওয়ামী সরকারের চলমান প্রকল্প এবং প্রস্তাবিত সব উন্নয়ন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা যাচাই–বাছাই করার কাজ ইতিমধ্যে আমরা শুরু করেছি। যে প্রকল্পগুলোতে কর্মসংস্থান তৈরি করবে, এমন প্রকল্পের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেওয়া হবে।’

লুটপাট বন্ধের পরিকল্পনা

ড. ইউনূস বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে রাশিয়া ও চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য, যেমন পেঁয়াজ, আলুর দাম আরও কমানোর উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতিমধ্যে এনবিআর পেঁয়াজ, আলু ও কতিপয় কীটনাশকের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক হ্রাস ও ক্ষেত্রবিশেষে রেগুলেটরি শুল্ক প্রত্যাহার করে এসআরও জারি করেছে। নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে হ্রাস করা মূল্যে কিছু পণ্য, যেমন পরিবারপ্রতি চাল মাসে পাঁচ কেজি, সয়াবিন তেল মাসে দুই কেজি ও মসুর ডাল মাসে দুই কেজি দেওয়া হচ্ছে। এটি সামনের দিনগুলোতে অব্যাহত রাখা হবে।

দেড় দশকে লাখ কোটি টাকা লুটপাট

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের অধীন চলমান সব ধরনের দর–কষাকষি (নেগোসিয়েশন), প্রকল্প বাছাই এবং ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। গত দেড় দশকে এই আইন ব্যবহার করে লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কোম্পানিগুলোতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার জন্য, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁদের বয়স সাড়ে ১২ বছরের কম ছিল, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প ও ঢাকার আশপাশে স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের রোডম্যাপ চূড়ান্তকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিধিবহির্ভূতভাবে দেওয়া প্লট ও ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’

ড. ইউনূস বলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ। ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর আঘাত আসবে  এমন কোনো কাজ কেউ কোনোভাবেই করবেন না।’ 

ড. ইউনূস বলেন, ছাত্র–শ্রমিক–জনতার বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ছিল গণভবন। এই সরকার বিপ্লবের প্রতি সম্মান দেখিয়ে গণভবনকে বিপ্লবের জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। যেসব মূল্যবান সামগ্রী জনতা নিয়ে গিয়েছিল, সেগুলো অনেকে ফেরত দিয়ে গেছেন। আর কিছু জিনিস পাওয়া যায়নি। যাঁরা নিয়ে গেছেন, তাঁরা যেন এসব সামগ্রী ফেরত দেন। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারদের পুনর্বাসন করা হবে। আহত সব শিক্ষার্থী–শ্রমিক–জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতি হিসেবে এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো অবকাশ আমাদের নেই। আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে যে সুপ্ত

প্রতিভা লুকিয়ে আছে, সেটা যেন বিনা বাধায় রাষ্ট্রের এবং সমাজের সহযোগিতায় প্রকাশ করতে পারি, সেই সুযোগের কাঠামো তৈরি করতে চাই। সবাই মিলে আমাদের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে, সে ঝাড়ুদার হোক, ছাত্র হোক, শিক্ষক হোক, যেকোনো ধর্মের হোক, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। এ–ই হলো আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *