আজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী সনদে সই করেছেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর গুম নিয়ে না ধরনের সমালোচনা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রায় সাতশ মানুষ গুম হয়ে রয়েছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিরা বেঁচে আছেন কিনা তা জানেন না পরিবারের সদস্যরা। তাহলে চিন্তা করে দেখুন বিষয়টি কতটা ভয়াবহ।
আজকে বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে ‘international convention for the protection of all persons from forced disappearance’ নথিতে সই করেন। এটি একটি জাতিসংঘের সনদ যা মূলত জোরপূর্বক গুম বিরোধী সনদ।
এই সনদে স্বাক্ষর করার ফলে বাংলাদেশ গুম বিরোধী কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাবে। জোরপূর্বক গুম প্রতিরোধে প্রয়োজনে বাংলাদেশের আইন সংস্কার করা হতে পারে অথবা নতুন আইন তৈরি করা হতে পারে। গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতাশীল ছিলেন। তিনি কখনো এই সনদে স্বাক্ষর করেননি। জাতিসংঘের এই সনদে স্বাক্ষর করে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস বলেন এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা লোকজনকে আটক করা হয়েছে, জোরপূর্ব ঘুম করার ঘটনাও ঘটেছে অনেক।
গত সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস বলেছিলেন গুম খুন ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিবর্গের সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। মঙ্গলবার কমিশন অফ ইনকয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬ এর অধীনে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে এই কমিশন গঠন করা হয়। কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন।
কমিশনের মূল দায়িত্ব হল বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা, আনসার ব্যাটেলিয়ন, এবং ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স ইত্যাদি সদস্যদের বলপূর্বক ঘুম বা অপহরণে তদন্ত করা।
আরো উল্লেখ করে বলা হয় যারা ঘুমের শিকার হয়েছেন তাদের আত্মীয়-স্বজনকে পাওয়া গেলে তাদের জানানো এবং বলপূর্বক গুমের ক্ষেত্রে অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত তদন্ত থেকে তথ্য সংগ্রহ করা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বলপূর্বক গুমের মামলার বিবরণ দাখিল করতে বলা হয়।
কমিশনকে আগামী ৪৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
1 thought on “আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী সনদে বাংলাদেশের স্বাক্ষর”